হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের অভ্যন্তরে আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন (এপিবিএন)-এর একটি গুরুত্বপূর্ণ অফিস দখলের অভিযোগ উঠেছে অ্যাভিয়েশন সিকিউরিটি ফোর্সের (অ্যাভসেক) বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় বিমানবন্দর থানায় দাখিল করা একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) ও সরেজমিনে ঘটনাস্থলের পরিদর্শনের মাধ্যমে এপিবিএন কর্মকর্তারা তাঁদের উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
মঙ্গলবার সকাল সোয়া ১০টায় অ্যাভসেকের স্কোয়াড্রন লিডার তাসফিক এপিবিএনের সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) জাকির হোসেনকে ফোন করে জানান, এপিবিএনের অফিস থেকে মালামাল সরিয়ে ৮ নম্বর হ্যাঙ্গারে রাখা হয়েছে এবং এগুলো সংগ্রহে পুলিশ সদস্য পাঠানোর নির্দেশ দেন। ফোন পাওয়ার পর এএসপি জাকির বিষয়টি তাঁর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অবহিত করেন এবং তাঁদের অনুমতি নিয়ে ঘটনাস্থলে যান।
জিডিতে উল্লেখ করা হয়েছে-
এপিবিএনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এই পদক্ষেপের বিষয়ে স্পষ্টীকরণের জন্য অ্যাভসেকের সঙ্গে যোগাযোগ করলে অ্যাভসেকের উপপরিচালক (অপারেশন) সাইফুর রহমান জানান, বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন এম কামরুল ইসলাম এবং অ্যাভসেকের পরিচালক উইং কমান্ডার মো. জাহাঙ্গীর হোসেনের নির্দেশেই মালামাল সরানো হয়েছে। তবে এই কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তাঁদের কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
সরেজমিন পরিদর্শনে এপিবিএনের কর্মকর্তারা দেখতে পান, এপিবিএন কার্যালয়ের প্রবেশমুখে টাঙানো ‘এয়ারপোর্ট আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন, এয়ার সাইড কমান্ড অ্যান্ড কন্ট্রোল সেন্টার’ সাইনবোর্ডটি ভাঙা অবস্থায় ভেতরে রাখা হয়েছে।
সরকারি কম্পিউটার, ইলেকট্রনিক ডিভাইস এবং ২০১০ সাল থেকে রক্ষিত গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্রের একাংশ নির্দিষ্ট স্থানে নেই। সিসিটিভি ক্যামেরাটি ভারী সাদা কাগজে মোড়ানো অবস্থায় পাওয়া গেছে, ফলে কাগজটি সরানো না হলে স্পষ্টতই কোনো সরানো সামগ্রীর তথ্য নিশ্চিত করা সম্ভব নয়।
অফিসের সামনের এপিবিএনের লোগোসংবলিত স্টিকারটি সরিয়ে সেখানে ‘বিএএফ টাস্কফোর্স’ লেখা এবং বিমানবাহিনী ও সিভিল অ্যাভিয়েশনের লোগোসহ নতুন স্টিকার লাগানো হয়েছে।
এপিবিএনের কর্মকর্তারা বলছেন, তাঁরা বিমানবন্দরের নিরাপত্তা এবং চোরাচালান প্রতিরোধের কাজে বর্তমানে যথাযথ ভূমিকা রাখতে পারছেন না। এই অফিসের মাধ্যমে অপরাধী বা সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের ওপর নজরদারি এবং দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ থাকলেও এখন এই কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। পরিস্থিতির উন্নতি না হলে এবং অফিসটি তাদের নিয়ন্ত্রণে ফিরিয়ে না দিলে বিমানবন্দরের নিরাপত্তা ব্যবস্থায় গভীর প্রভাব পড়তে পারে বলে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন তাঁরা।
বিমানবন্দরের মতো অত্যন্ত সংবেদনশীল স্থানে নিরাপত্তা বাহিনীর এই অভ্যন্তরীণ সংকটের কারণে পুরো নিরাপত্তা ব্যবস্থা এবং শৃঙ্খলায় বড় ধরনের চাপ তৈরি হচ্ছে।