যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের বাণিজ্য যুদ্ধের কারণে চীন যুক্তরাষ্ট্র থেকে সয়াবিন আমদানি প্রায় বন্ধ করে দিয়েছে। এর ফলে বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদের জন্য সুযোগ তৈরি হয়েছে। বাংলাদেশ এখন কম দামে যুক্তরাষ্ট্র থেকে সয়াবিন আমদানি করছে।
এক সময় যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় ক্রেতা ছিল চীন। তবে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের পাল্টা শুল্ক আরোপের পর দুই দেশের বাণিজ্য সম্পর্কের টানাপড়েন শুরু হয়, যার কারণে চীনের আমদানি কমে যায়। বাংলাদেশের সয়াবিন আমদানিকারক, মিলার ও তেল নিষ্কাশনকারী প্রতিষ্ঠান বলছেন, চীনের অনুপস্থিতিতে মার্কিন বাজার থেকে তারা সাশ্রয়ী মূল্যে সয়াবিন কিনতে পারছেন।
সাধারণত বাংলাদেশ লাতিন আমেরিকা থেকে সয়াবিন আমদানি করত, বিশেষ করে ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনা থেকে। কিন্তু চীনের ক্রমবর্ধমান চাহিদা ও সেখানে দাম বেড়ে যাওয়ায় বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা মার্কিন সয়াবিনে আগ্রহী হয়েছেন। ব্লুমবার্গ জানিয়েছে, চলতি মৌসুমে চীন যুক্তরাষ্ট্র থেকে একটিও চালান নেয়নি। এতে মার্কিন কৃষকরা ক্রেতা সংকটে পড়েছেন এবং দাম কমেছে।
রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ ইতিমধ্যেই যুক্তরাষ্ট্র থেকে ৪ লাখ টনের বেশি সয়াবিন আমদানি করেছে। মেঘনা গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের উপ-মহাব্যবস্থাপক মো. তাসলিম শাহরিয়ার বলেন, চীনের পাল্টা শুল্ক আরোপের পর মার্কিন সয়াবিন আমদানির সুযোগ তৈরি হয়েছে। তিনি বলেন, “ব্রাজিলের তুলনায় মার্কিন সয়াবিনের দামে প্রতি টনে প্রায় ৪০ ডলার কম।”
ডেল্টা অ্যাগ্রোফুডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আমিরুল হক বলেন, “আমেরিকান সয়াবিনের মান ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনার তুলনায় ভালো এবং দামেও প্রতি টনে ২০–৩০ ডলার কম।” তিনি আরও জানান, যুক্তরাষ্ট্র থেকে সয়াবিন আমদানি বাড়লে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য ঘাটতি কমাতে সহায়ক হবে।
শুল্ক কার্যকর হওয়ার পর বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের সয়াবিন আমদানি দ্বিগুণ হয়েছে। আগস্ট ও সেপ্টেম্বরে বাংলাদেশে আমদানির পরিমাণ ৪ লাখ টন, যা আগের দুই মাসের ২ লাখ টনের দ্বিগুণ। শুধু সেপ্টেম্বরে ১ লাখ ১৪ হাজার টন আমদানি হয়েছে যুক্তরাষ্ট্র থেকে, যা মোট আমদানির ৮৭.১১ শতাংশ।
বাংলাদেশে ২০২৫-২৬ বিপণন বছরে সয়াবিন তেল নিষ্কাশনের পরিমাণ ২৪ লাখ টনে পৌঁছাবে, যা ৯.১ শতাংশ বৃদ্ধি নির্দেশ করছে।

