প্রয়াত ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক ছিলেন দেশের আইন অঙ্গনের এক অনন্য ব্যক্তিত্ব, যার বিচরণ ছিল এই পেশার প্রায় সব শাখায়। সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি সৈয়দ মোহাম্মদ জিয়াউল করিম এ মন্তব্য করেছেন।
সোমবার (১৯ মে) সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির শহীদ শফিউর রহমান মিলনায়তনে ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাকের স্মরণে আয়োজিত এক দোয়া ও আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিচারপতি জিয়াউল করিম বলেন, “তিনি যে মূল্যবান সময় দেশের আইন অঙ্গন এবং ন্যায় প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ব্যয় করতে পারতেন সে সময় তিনি ছিলেন প্রবাসে। কিন্তু ২৬ ডিসেম্বর দেশে ফিরে বিমানবন্দরে দাঁড়িয়ে তিনি যে বক্তব্য দিয়েছিলেন, তাতে বোঝা যায় তিনি কতটা গভীর ও দূরদর্শী মানুষ ছিলেন।”
বিচারপতি করিম আরও বলেন, “ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক সাংবিধানিক আইন, ব্যাংকিং আইন, বাণিজ্যিক আইন, টেলিকম আইন এবং আন্তর্জাতিক অপরাধ আইনের মতো জটিল ও গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে সক্রিয় ছিলেন। আমি নিজেও বেঞ্চে বসে তার পাণ্ডিত্যপূর্ণ উপস্থাপন প্রত্যক্ষ করেছি। তার জ্ঞান, যুক্তি এবং প্রজ্ঞা সবসময় আলাদা করে চিনিয়ে দিয়েছে তাকে।”
তিনি জানান, ব্যারিস্টার রাজ্জাকের আদর্শ ও কর্মপদ্ধতির প্রতিফলন আমাদের জীবনে ঘটাতে পারলেই কেবল এই আলোচনা সভা সার্থক হবে। অন্যথায় এই আয়োজনের কোনো বাস্তব মূল্য থাকবে না বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
আলোচনা সভাটি আয়োজন করে বাংলাদেশ ল’ইয়ার্স কাউন্সিল। সংগঠনের সভাপতি জসিম উদ্দিন সরকারের সভাপতিত্বে এতে আরও বক্তব্য রাখেন হাইকোর্ট বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি আবু তারিক, বিচারপতি ইমদাদুল হক আজাদ এবং বার কাউন্সিলের ভাইস চেয়ারম্যান ও সিনিয়র আইনজীবী জয়নুল আবেদীন।
সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সম্পাদক ব্যারিস্টার বদরুদ্দোজা বাদল, ব্যারিস্টার রহুল কুদ্দুস কাজল, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের জামায়াতের আমির নুরুল ইসলাম বুলবুল, ব্যারিস্টার রাজ্জাকের জুনিয়র সহকর্মী ব্যারিস্টার বেলায়েত হোসেন, মোহাম্মদ হোসেন ও শিশির মনির সভায় অংশ নেন এবং স্মৃতিচারণ করেন।
আলোচনা সভায় ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাকের পরিবারের পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন তাঁর দুই পুত্র ব্যারিস্টার এহসান এ সিদ্দিক ও ব্যারিস্টার ইমরান এ সিদ্দিক।
সভার বক্তারা সবাই একমত হন যে, ব্যারিস্টার রাজ্জাকের পেশাগত নিষ্ঠা, মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি ও অনন্য বাগ্মিতা নতুন প্রজন্মের আইনজীবীদের জন্য অনুকরণীয় হয়ে থাকবে। তাঁর কর্ম ও আদর্শকে সামনে রেখে আইন অঙ্গনে ন্যায়, পেশাদারিত্ব ও দায়িত্ববোধ প্রতিষ্ঠিত হোক এই ছিল তাদের প্রত্যাশা।