দেশের উন্নয়ন প্রকল্প তদারকির দায়িত্বে থাকা পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের অধীন বাস্তবায়ন, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগ (আইএমইডি) নিজেই এখন দুর্নীতি ও অপচয়ের অভিযোগে বিদ্ধ। সংশ্লিষ্টদের দাবি, ‘নিবিড় পরিবীক্ষণ ও প্রভাব মূল্যায়ন’-এর নামে জনগণের কোটি কোটি টাকা অপচয় করা হচ্ছে পরিকল্পিতভাবে। যেখানে মাত্র চার কোটি টাকায় কাজ শেষ করা সম্ভব, সেখানে আইএমইডি খরচ করছে ২৬ কোটি টাকা। এমন অস্বাভাবিক ব্যয় উন্নয়ন বাজেট ব্যবস্থাপনায় জবাবদিহিতার অভাব এবং দুর্নীতির গভীর সংকেত দিচ্ছে।
আইএমইডির এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, প্রতি বছর ৭৬টি প্রকল্পের নিবিড় পরিবীক্ষণ ও সমাপ্ত প্রকল্পের প্রভাব মূল্যায়ন করা হয়। ২০২৪-২৫ অর্থবছরেও ৫৫টি চলমান ও ২১টি সমাপ্ত প্রকল্প নিয়ে এমনই পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। এসব প্রকল্পকে চারটি ক্যাটাগরিতে ভাগ করে, ক্যাটাগরি অনুযায়ী ব্যয়ের পরিমাণ নির্ধারণ করা হয়। এ বছর ৭৬টি প্রকল্প মূল্যায়নের জন্য প্রাক্কলিত বাজেট ধরা হয়েছে ২৬ কোটি টাকা।
তবে একাধিক কর্মকর্তা বলছেন, আইএমইডির নিজস্ব জনবল দিয়েই এই কাজ দক্ষতার সঙ্গে সম্পন্ন করা সম্ভব। সংস্থার পরিপত্রে এমন সমীক্ষা নিজস্বভাবে করার সুযোগও রয়েছে। তাদের হিসাব অনুযায়ী, প্রতিটি প্রকল্পের জন্য সর্বোচ্চ পাঁচ লাখ টাকা ব্যয় ধরলে, ৭৬টি প্রকল্পে খরচ হতো প্রায় ৩ কোটি ৮০ লাখ টাকা।
কিন্তু আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে বেসরকারি ফার্ম নিয়োগ করায় ব্যয় বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৬ কোটি টাকা। এতে জনগণের গাঁটের টাকা থেকে ২২ কোটি টাকা অতিরিক্ত খরচ হচ্ছে শুধুই অদক্ষ পরিকল্পনা ও স্বার্থনির্ভর সিদ্ধান্তের কারণে। এই অর্থ অপচয়ের ঘটনায় প্রশ্ন উঠেছে— যখন দেশজুড়ে অর্থ সংকট, তখন সরকারি একটি গুরুত্বপূর্ণ সংস্থা এমন ‘লুটপাট’ কীভাবে চালাতে পারে?