‘এটা নতুন সুযোগ, নতুন পরিস্থিতি। সংস্কারের জন্য অনেক কিছু করতে হবে। তবে অন্তর্বতীকালীন সরকার একাই সবকিছু করবে-এটি ভুল ধারণা’ বলে মন্তব্য করেছেন, জাতীয় শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির প্রধান ও সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য।
শনিবার রাজধানীর ইস্কাটনের বিস্ মিলনায়তনে সেন্টার ফর গভর্ন্যান্স স্টাডিজ (সিজিএস) আয়োজিত ‘ডায়ালগ ফর ডেমোক্রেটিক রিকনষ্ট্রাকশন’ শীর্ষক সংলাপে তিনি এ কথা বলেন।
ভট্টাচার্য বলেন, ‘অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ও স্বস্তির অভাব থাকলে প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার ও নির্বাচনী ব্যবস্থার দিকে এগোনোর গতি বাধাগ্রস্ত হবে।’
তার মতে, দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতিই চূড়ান্তভাবে নির্ধারণ করবে আমরা কত দ্রুত ও কিভাবে প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার করতে পারি এবং নির্বাচনের দিকে যেতে পারি।
এই প্রসঙ্গে তিনি আরো বলেন, ‘সরকারের কাছে এখন সময় এসেছে, তারা কোন ক্ষেত্রে নজর দেবে তা বুঝতে হবে। প্রকৃত মজুরি রক্ষা করা, কৃষি পণ্যের ন্যায্যমূল্য দেয়া ও সামাজিক সুরক্ষা বজায় রাখা এগুলো অত্যন্ত জরুরি।
দেবপ্রিয় আরো বলেন, দেশের ভিতরে একটি স্বস্তির পরিবেশ তৈরি করতে হবে। এর জন্য সরকারের নীতিমালা স্পষ্ট এবং কার্যকর হওয়া প্রয়োজন।
তিনি আরো বলেন, ‘নীতিমালা সংশোধিত বাজেটের মাধ্যমে বা আগামী বাজেট প্রণয়নের সময় স্পষ্ট করা যেতে পারে।’
তিনি রাজনৈতিক নিয়ন্ত্রণের প্রভাবের বিষয়েও সতর্ক করেছেন। “ব্যক্তির ওপর রাজনৈতিক নিয়ন্ত্রণ আরোপের অর্থনৈতিক তাৎপর্য থাকতে পারে। রাজনৈতিক অধিকার ক্ষুণ্ণ হলে অর্থনীতিতে অংশগ্রহণের অধিকারও ক্ষুণ্ণ হয়,” তিনি উল্লেখ করেন।
উচ্চবর্গের মানুষের ব্যর্থতার কথা উল্লেখ করে দেবপ্রিয় বলেন, ‘এটি যেন ভবিষ্যতে আর না ঘটে সেই লক্ষ্য নিয়ে আমাদের কাজ করতে হবে। এখানে জবাবদিহির ক্ষেত্রে শিথিলতার সুযোগ নেই।’
সংলাপ শেষে তিনি বলেন, ‘এখন আমাদের প্রত্যেকের কাছে নিষ্ঠুর ভালোবাসা দেখানোর সময় এসেছে। সরকার সব সংস্কার করতে পারবে, এমন ধারণা থাকা উচিত নয়। রাজনৈতিক দলগুলোর নির্বাচনী ইশতেহারে সংস্কারগুলো কিভাবে উপস্থাপন করা হবে, সেটি সঠিকভাবে তুলে ধরতে হবে।’
দেবপ্রিয় ভট্টাচার্যের এসব মন্তব্য দেশের রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক পরিসরে নতুন আলো ফেলেছে, যা আগামী দিনে কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণে সহায়ক হতে পারে।