বৃহস্পতিবার প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে দেখা গেছে, চীনের বিওয়াইডি (BYD) প্রথমবারের মতো ত্রৈমাসিক আয়ে মার্কিন প্রযুক্তি কোম্পানি টেসলাকে (Tesla) পেছনে ফেলেছে। জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত প্রান্তিকে বিওয়াইডির আয় ২৮.২ বিলিয়ন ডলার, যা টেসলার ২৫.১৮ বিলিয়ন ডলারের চেয়ে তিন বিলিয়ন ডলার বেশি।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি ও চীনের সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টের খবর অনুযায়ী, এই সময়ে বিওয়াইডির আয় গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ২৪ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। একই সাথে, তাদের নেট মুনাফাও বেড়েছে ১১.৫ শতাংশ। যদিও টেসলা এই সময়ের মধ্যে বেশি গাড়ি বিক্রি করেছে, তবুও বিওয়াইডির প্রবৃদ্ধি বাজারের একটি নতুন দিক নির্দেশ করছে।
বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, চীনা সরকার পেট্রোল চালিত গাড়ি ছেড়ে বৈদ্যুতিক বা হাইব্রিড গাড়ি কেনার জন্য জনগণকে ভর্তুকি দিচ্ছে। গত সপ্তাহে, পুরনো গাড়ি বদলে নতুন বৈদ্যুতিক গাড়ি কেনার জন্য ১৫ লাখের বেশি আবেদন জমা পড়েছে। সুইস প্রতিষ্ঠান ইউবিএসের গবেষণা পূর্বাভাস অনুযায়ী, ২০৩০ সালের মধ্যে চীনের ৬০ শতাংশ গাড়ি বৈদ্যুতিক হবে।
এদিকে, বিওয়াইডির মতো চীনা গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর উত্থানের ফলে চীনে টেসলার বিক্রি কমতে শুরু করেছে। সাংহাইয়ের অটোমোটিভ ফোরসাইটের প্রধান ইয়েল ঝ্যাং সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টকে বলেন,
“টেসলা যদি চীনে তাদের গাড়ির দাম কমাতে না পারে, নতুন মডেল না আনতে পারে, অথবা সম্পূর্ণ স্বচালিত গাড়ির ফিচার চালু না করে, তাহলে তাদের প্রবৃদ্ধির সম্ভাবনা খুব কম।”
চীনা বৈদ্যুতিক গাড়ি কোম্পানিগুলোর প্রধান বিদেশি বাজার ইউরোপ। তবে ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রে চীনা গাড়ির প্রবৃদ্ধি থামাতে শুল্ক বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। সম্প্রতি, ইউরোপীয় ইউনিয়ন চীনা বৈদ্যুতিক গাড়ির ওপর ৪৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডায় এই শুল্কের পরিমাণ ১০০ শতাংশ।
আন্তর্জাতিক বাজারে চাপ বাড়ানোর মধ্যে চীনা বৈদ্যুতিক গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর ভবিষ্যৎ প্রবৃদ্ধির পথ কতটা প্রশস্ত হবে, তা দেখার অপেক্ষায় থাকছে সারা দুনিয়া।