দেশের শিল্পকলা চর্চা ও গবেষণার অন্যতম প্রধান প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি আইন ও প্রবিধানমালার সংস্কারের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। একাডেমির পক্ষ থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, প্রতিষ্ঠানটির আইনি কাঠামো ও প্রবিধানের দুর্বলতা দূর করে একাডেমির কার্যক্রম আরও কার্যকর ও সুশৃঙ্খল করতে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক হিসেবে নাট্যব্যক্তিত্ব সৈয়দ জামিল আহমেদ দায়িত্ব গ্রহণের পরপরই এই সংস্কারের কার্যক্রম শুরু করেছেন। রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর তাঁর নিয়োগের মধ্য দিয়ে একাডেমির সংস্কার কাজ দ্রুত গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে। এরই মধ্যে তিনি শিল্পী, শিল্প সমালোচক এবং মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় ও আলোচনা সভার আয়োজন করে তাঁদের মতামত সংগ্রহ করেছেন। একাডেমি সংশ্লিষ্টরা জানান, এই আলোচনার মাধ্যমে একাডেমির আইন ও প্রবিধানমালার গঠনমূলক পরিবর্তনের রূপরেখা প্রস্তুত করা হচ্ছে।
বর্তমান আইন, যা ১৯৮৯ সালে প্রণীত হয়েছিল, তা সংশোধনের মাধ্যমে একাডেমির কাঠামোগত পুনর্গঠন, কাজের পরিধি ও ক্ষমতার দিকগুলো পুনর্বিবেচনা করা হচ্ছে। একাডেমির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, আইনি সংস্কার প্রক্রিয়ায় একটি বিশেষ কমিটি ইতোমধ্যে গঠিত হয়েছে, যা একাডেমির প্রবিধানমালা সংশোধনের কাজ করছে।
এ প্রসঙ্গে মহাপরিচালক সৈয়দ জামিল আহমেদ বলেছেন, “বিগত দিনগুলোয় যেভাবে কার্যক্রম পরিচালিত হয়েছে, সেগুলো আইনি বিধি মেনে আর্থিক স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার মধ্যে আনা হবে।” এই লক্ষ্যে মহা হিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রকের কার্যালয়ে বিশেষ অডিটের জন্য আবেদন করা হয়েছে, যার মাধ্যমে একাডেমির আর্থিক কার্যক্রমে কোনো দুর্নীতি বা অসঙ্গতি আছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হবে। এছাড়া, একাডেমির কার্যক্রম সম্পর্কিত তথ্যাদি নিয়মিতভাবে তাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করার ঘোষণাও দেওয়া হয়েছে।
প্রতিষ্ঠানের ইনভেন্টরি ব্যবস্থা আরও জোরদার করার অংশ হিসেবে সম্প্রতি কিছু কর্মকর্তার কক্ষে পাওয়া অনুষ্ঠান আয়োজনসংক্রান্ত অর্থ একাডেমির ফান্ডে জমা দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে কোনো অনিয়ম আছে কি না, তা অভ্যন্তরীণ রিভিউ কমিটির মাধ্যমে যাচাই–বাছাই করা হচ্ছে। একাডেমি পরিষ্কারভাবে জানিয়েছে, অনিয়ম বা দুর্নীতির কোনো প্রমাণ পাওয়া গেলে, সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে এবং এসব পদক্ষেপ শিল্পকলা আইন ও প্রবিধানমালার ভিত্তিতেই নেওয়া হবে।
এই সংস্কার কার্যক্রমের ফলে একাডেমির প্রশাসনিক ও আর্থিক শৃঙ্খলা যেমন বৃদ্ধি পাবে, তেমনি এটি দেশের শিল্প সংস্কৃতির প্রসারে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে বলে আশা করা হচ্ছে।