রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন একটি সতর্কবার্তা উচ্চারণ করেছেন, যা ইউক্রেন সংকটের নতুন পর্যায়ে প্রবেশের ইঙ্গিত দিচ্ছে। তিনি বলেছেন, যদি যুক্তরাষ্ট্র এবং ন্যাটো মিত্ররা ইউক্রেনকে দীর্ঘ-পাল্লার পশ্চিমা ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহ করে রাশিয়ার ভূখণ্ডের মধ্যে হামলা চালাতে সহায়তা করে, তাহলে মস্কো তার প্রতিশোধ নেবে। এ প্রসঙ্গে পুতিনের মন্তব্যে দেখা যায় যে, রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় সম্ভাব্য হামলার জবাব দেওয়ার বিভিন্ন কৌশল নিয়ে কাজ করছে।
রোববার বার্তাসংস্থা রয়টার্সের একটি প্রতিবেদনে এ বিষয়টি উল্লেখ করা হয়। রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনের এক সাক্ষাৎকারে পুতিন বলেন, “আমাদের দেশের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে এবং এই ধরনের দূরপাল্লার হামলার বিরুদ্ধে আমাদের কীভাবে প্রতিক্রিয়া জানাতে হবে, সে বিষয়ে আমরা চিন্তাভাবনা করছি।”
এই পরিস্থিতির মধ্যেই, রাশিয়ার বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ইউক্রেনের ৫১টি ড্রোন ধ্বংস বা প্রতিহত করেছে বলে জানিয়েছে। রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় টেলিগ্রাম অ্যাপে একটি বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছে, মস্কো থেকে প্রায় ৪৫০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্বে তামবোভ অঞ্চলে ১৮টি ড্রোন প্রতিহত করা হয়েছে। পাশাপাশি, বেলগোরোদ সীমান্ত অঞ্চলে ১৬টি এবং রাশিয়ার দক্ষিণে ভোরোনেজ, ওরিওল ও কুরস্ক অঞ্চলে আরও ড্রোন ধ্বংস করা হয়েছে।
বেলগোরোদের আঞ্চলিক গভর্নর ভিয়াচস্লাভ গ্লাদকভ টেলিগ্রামে জানিয়েছেন, ড্রোন হামলায় সেখানে একজন নারী আহত হয়েছেন এবং কয়েকটি গাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে, রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় শুধুমাত্র তাদের ইউনিটগুলো কতগুলো ড্রোন ধ্বংস করেছে, সে বিষয়ে তথ্য প্রকাশ করে, ইউক্রেন কতগুলো ড্রোন উৎক্ষেপণ করেছে, তা সম্পর্কে তারা চুপ রয়েছে।
রুশ কর্মকর্তাদের ক্ষেত্রে, সাধারণত আক্রমণের ফলে ক্ষয়ক্ষতির পুরো পরিমাণ প্রকাশ করা হয় না, বিশেষ করে যখন বিষয়টি সামরিক বা শক্তি অবকাঠামোর সাথে জড়িত হয়।
রুশ এবং ইউক্রেনীয় ব্লগারদের তথ্য অনুসারে, রুশ বাহিনী পূর্ব ইউক্রেনের বেশ কয়েকটি শহরে অগ্রসর হয়েছে, যা তাদেরকে কৌশলগত শহর পোকরোভস্ক দখলের কাছে নিয়ে এসেছে। গত এক সপ্তাহ ধরে, ইউক্রেনের ডনেটস্ক অঞ্চলের কয়লা খনি শহর সেলিডোভে হামলা চালাচ্ছে রুশ বাহিনী। শহরটি দখল করা গেলে, এটি ২০ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে পোকরোভস্কের লজিস্টিক্যাল হাবের দিকে রাশিয়ার অগ্রযাত্রার পথকে প্রশস্ত করবে।
অবস্থাটি ক্রমেই জটিল হয়ে উঠছে এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের নজর এখন এই সংকটের দিকে নিবদ্ধ হয়েছে। ইউক্রেনের জন্য এই মুহূর্তটি অত্যন্ত সংকটময়। এ পরিস্থিতির উন্নয়নে আন্তর্জাতিক সমর্থনের প্রয়োজনীয়তা বৃদ্ধি পাচ্ছে।