ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় আটক সব ইসরায়েলি জিম্মিকে ছেড়ে দিতে রাজি হয়েছে হামাস। সংগঠনটি শুক্রবার জানায়, শীর্ষ নেতৃত্ব, ফিলিস্তিনি বিভক্ত অংশগুলো এবং মধ্যস্থতাকারীদের সঙ্গে ‘গভীর পরামর্শ’ শেষে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ওই দিনই হুঁশিয়ারি দেন, আগামী রোববার যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে শান্তি পরিকল্পনার প্রস্তাব মেনে নিতে হবে। নয়তো হামাসকে ‘নরকযন্ত্রণা ভোগ’ করতে হবে। প্রস্তাবে সব জিম্মি মুক্তি ও নিহতদের মরদেহ ফেরত দেওয়ার শর্তও রয়েছে।
কয়েক ঘণ্টার মধ্যে হামাস জানায়, তারা ট্রাম্পের শান্তি প্রস্তাব আংশিকভাবে মানতে রাজি। এর মধ্যে বন্দিবিনিময় প্রক্রিয়া মেনে জীবিত ও মৃত সব জিম্মিকে মুক্তি দেওয়ার শর্ত রাখা হয়েছে। তবে এই প্রক্রিয়ার জন্য মাঠপর্যায়ের শর্ত মেনে চলতে হবে। হামাস মধ্যস্থতাকারীদের মাধ্যমে অবিলম্বে বিস্তারিত আলোচনার জন্য প্রস্তুত।
হামাস আরও জানিয়েছে, গাজা উপত্যকার শাসনভার তারা কোনো বিদেশি সংস্থার হাতে হস্তান্তর করবে না। শাসনভার ফিলিস্তিনিদের দ্বারাই পরিচালিত হবে, এমনকি অন্তর্বর্তী সময়ের জন্য হলেও। তারা একটি স্বাধীন ফিলিস্তিনি সংস্থাকে (টেকনোক্র্যাট) নিয়ন্ত্রণে আনতে চায়, যা ফিলিস্তিনি জাতীয় ঐকমত্য এবং আরব ও ইসলামি বিশ্বের সমর্থনে গঠিত হবে।
হামাসের এ ঘোষণার পর ট্রাম্প তাদের স্বাগত জানিয়ে বলেছেন, ইসরায়েলকে গাজায় বোমাবর্ষণ বন্ধ করতে হবে, যাতে জিম্মিদের নিরাপদে মুক্তি দেওয়া সম্ভব হয়। তিনি বলেছেন, চলমান হামলা ও সংঘাতের মধ্যে জিম্মি মুক্তি বিপজ্জনক হতে পারে।
তবে হামাস স্পষ্ট করেছে, ট্রাম্পের ২০ দফা শান্তি পরিকল্পনার সব শর্ত তারা মেনে নেবে না; আংশিক সম্মতি দেওয়া হয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোর মধ্যে রয়েছে গাজাকে সামরিকীকরণ মুক্ত রাখা। হামাস কর্মকর্তা মুসা আবু মারজুক বলেছেন, ইসরায়েলি দখল পুরোপুরি শেষ না হওয়া পর্যন্ত তারা গাজা নিরস্ত্রীকরণ করবে না।
সংবাদ সম্মেলনে উল্লেখ করা হয়েছে, গাজার ভবিষ্যৎ ও ফিলিস্তিনি অধিকার সম্পর্কিত বিষয়গুলো আন্তর্জাতিক আইন ও নীতিমালার ভিত্তিতে জাতীয় কাঠামোর মধ্যে আলোচনা করা হচ্ছে। ট্রাম্পও তাঁর ট্রুথ সোশ্যাল পোস্টে হামাসের আনুষ্ঠানিক বিবৃতির পূর্ণ কপি যুক্ত করেছেন, যা নজিরবিহীন।

