ইসরায়েলি সরকার আন্তর্জাতিক এবং দেশীয় সমালোচনা মোকাবিলার জন্য সোশ্যাল মিডিয়ার ইনফ্লুয়েন্সারদের পেছনে ব্যাপক অর্থ ব্যয় করছে। রেসপনসিবল স্টেটক্রাফটের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ১৪ থেকে ১৮ জন ইনফ্লুয়েন্সার প্রতি মাসে ২৫ থেকে ৩০টি করে ইসরায়েলপন্থী পোস্ট করবেন।
মিডল ইস্ট আই অনুসারে, প্রতিটি পোস্টের জন্য তারা ৬ থেকে ৭ হাজার ডলার পর্যন্ত উপার্জন করতে পারবেন। এই উদ্যোগকে ‘এসথার প্রজেক্ট’ নামে পরিচিত করা হয়েছে।
গাজায় দুই বছরের সংঘাতের পর আন্তর্জাতিক মহলে ইসরায়েলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হয়েছে। এ পরিস্থিতিতে নিজেদের হারানো সমর্থন পুনরুদ্ধার ও তথ্যের যুদ্ধে জেতার লক্ষ্যেই দেশটি মার্কিন ইনফ্লুয়েন্সারদের পেছনে লাখ লাখ ডলার ব্যয় করছে।
ইসরায়েলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ব্রিজেস পার্টনার্স এলএলসি নামে ওয়াশিংটন ভিত্তিক সংস্থাকে এই ইনফ্লুয়েন্সারদের পরিচালনার জন্য অর্থ প্রদান করছে। সংস্থাটি ইনফ্লুয়েন্সারদের ইনস্টাগ্রাম, টিকটক, এক্স, ইউটিউব এবং থ্রেডসসহ বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে পোস্ট তৈরি এবং প্রচার কার্যক্রমে নিয়োজিত করছে।
প্রকল্পের লক্ষ্য হিসেবে সংস্থাটি জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের মধ্যে সাংস্কৃতিক ও কূটনৈতিক সম্পর্ক উন্নয়নে সহায়তা করা। এছাড়া ইসরায়েলি মিডিয়ার প্রচারণা কার্যক্রমকে সমর্থন ও জোড়দার করার মাধ্যমে দেশটির আন্তর্জাতিক ভাবমূর্তি পুনর্গঠন করা হবে।
প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু নিউইয়র্ক সফরে একদল ইনফ্লুয়েন্সারের সঙ্গে দেখা করেন এবং জানান, ইসরায়েলের প্রতি কমে আসা সমর্থন মোকাবিলার অন্যতম উপায় হলো সোশ্যাল মিডিয়ার ব্যবহার।
তিনি উল্লেখ করেন, এটি ইসরায়েলের প্রচারণা কৌশলের একটি পরিপূরক, যা প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রাক্তন প্রচার ব্যবস্থাপক ব্র্যাড পার্সকেলের সঙ্গে ১.৫ মিলিয়ন ডলারের চুক্তির সঙ্গে সম্পর্কিত। চুক্তির লক্ষ্য যুক্তরাষ্ট্রে ইহুদিবিদ্বেষ মোকাবিলা করা।
তথ্যের যুদ্ধে ব্যর্থতার কারণে ইসরায়েলি সরকার দেশেও সমালোচনার মুখে পড়েছে। আগস্টে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী নাফতালি বেনেট দাবি করেন, বর্তমান সরকার ইসরায়েলকে ‘একটি কুষ্ঠরোগী রাষ্ট্র’তে পরিণত করেছে।
এদিকে, বিভিন্ন জরিপে দেখা গেছে যে, ইসরায়েলের প্রতি সমর্থন ক্রমশ হ্রাস পাচ্ছে। ইউগভ পোলিং-এর জরিপে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, ৬২ শতাংশ মানুষ ইসরায়েলি কর্মকর্তা ও সৈন্যদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞার পক্ষে, ৬৫ শতাংশ ডেমোক্র্যাট উত্তরদাতা এই নিষেধাজ্ঞার পক্ষে এবং ৭২ শতাংশ মানুষ বিশ্বাস করেন যে, ইসরায়েল গাজায় গণহত্যা চালাচ্ছে।
জরিপটি ফিলিস্তিনি অধিকার প্রচারকারী অ্যাডভোকেসি গ্রুপ ইনস্টিটিউট ফর মিডল ইস্ট আন্ডারস্ট্যান্ডিং পলিসি প্রজেক্ট এবং যুব নেতৃত্বাধীন সংস্থা জেন-জেড ফর চেঞ্জ-এর জন্য পরিচালিত হয়।

